পুরুষের প্রতি অবিচারে চুপ সবাই

Comments · 482 Views

জানি এখানেও একদল এসে পুরুষতন্ত্রের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে যাবে

  • পরকীয়া!
  • অবশ্যই আমিও একজন পুরুষ। আর পুরুষ বলেই যে এই ধরনের বিষয়গুলো আমার গায়ে লাগে, ব্যাপারটা কিন্তু এমন না! আমার কথাগুলো একটু পজিটিভ দৃষ্টিতে পড়বেন। আমি কোন নারীকে ছোট করে কিছু বলছিনা। আমি সেসব নারীর বিপক্ষেই বলছি, যারা কুকর্মে লিপ্ত এবং একটা ছেলের জীবন তছনছ করে দিচ্ছে। ছেলেরাও ধোয়া তুলসি পাতা নয়। দোষ কিন্তু সব পক্ষের দিকেই হয়!
    প্রথমত, পুরুষের পক্ষে কিন্তু কোন আঈন নেই। যেমন, পুরুষের উপর কেউ অত্যাচার করার কোন আঈন কিন্তু নেই।
    এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, 'কি ভাই, কোথাও কি শুনছেন কোন পুরুষের উপর অত্যাচার হইছে? বাপের জন্মেও শুনিনি।'
    কিন্তু, একবার ভেবে দেখুন তো, আপনি একজন পুরুষ। আপনার উপর অত্যাচার হলে আপনি সেটা প্রকাশ করবেন সহজে? কখনোই না। আপনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এটা প্রকাশ করতে পারবেন না মান সম্মানের ভয়ে, লজ্জায়। অন্যদিকে, একটা মেয়ের উপর ১% অত্যাচার হলেও মেয়েটা কিন্তু হাউমাউ করে কাঁদবে, বাপকে জানাবে, আসেপাশের সবাইকে জানাবে। কি? জানাবে না? - ঠিক এজন্যই মহিলারা অত্যাচারিত হচ্ছে, এটা সবাই আসেপাশে দেখছে, শুনছে, এই ঘরের বউ কানলে দুই তিন গ্রাম পর্যন্ত কান্নাকাটিতে ছড়িয়ে যায় বউর উপর অত্যাচার করে। কিন্ত পুরুষরা কেউ প্রকাশ করেও না, শুনেও না, জানেও না কেউ। খুবই রেয়ার এটা।
    এখন অত্যাচার আবার কতোরকম? শুধু কি গায়ে হাত তোলাটাই অত্যাচার, অবিচার বা নির্যাতন? নাহ। হতে পারে তা শারীরিক, হতে পারে তা মানসিক।
    আপনার বউ পরকীয়া করে, আপনি হাউমাউ করে কেঁদেকেটে কাউকে বলতে পারবেন এগুলো? কাউকে বলবেন না। অথচ, আপনি পরকীয়া করেন, আপনার বউ কেঁদেকেটে "আল্লাগো, আব্বাগো, আমার জীবনডা সেস, আমার ফোলাফাইনডির কি অইবো অহন, আমি কই যায়মুগো।" ইত্যাদি বলে বিলাপ করে পুরো এলাকা, থানা, পুলিশ, বাপ-দাদা চোদ্দগুষ্টি পর্যন্ত এগুলো ছড়িয়ে যাবে। অথচ, আপনার বউ পরকীয়া করলে আপনি পারবেন না কাউকে বলতে, পারবেন না কারো সামনে কাঁদতে, পারবেন না গিয়ে আঈনের কাছে বিচার চাইতে।
    ওকে ফাইন, ধরুন আপনি থানায় গিয়ে মামলা করলেন। আপনার বউ পরকীয়া করছে। তখন আপনার মামলাকে দেখা হবে "আচ্ছা আমরা দেখবো বিষটা।" এরকম। কিন্তু, প্রতিত্তোরে আপনার বউ যদি আপনার নামে মামলা করে "আপনি তাকে প্রতি রাতে শারীরিক অত্যাচার করেন, মানসিক প্রেসার দেন, গায়ে হাত তুলেন।" এগুলো যদি একবার বলে, আপনাকে সাথে সাথে ধরে নিয়ে যাবে। কোন কথা নেই, জাস্ট এসে ধরে নিয়ে যাবে। কারণ, নারী নির্যাতন এর মামলা খুব সিরিয়াসভাবে নেওয়া হয়।
    ওকে ফাইন, ধরুন আপনি বিয়ে করেছেন ৫ লাখ কাবিন দিয়ে। এখন আপনার বউ পরকীয়া করছে এবং অশান্তি করছে। আপনি চাচ্ছেন বউকে তালাক দিবেন। এবার দেখেন খেলাটা কিভাবে জমে। আজকাল ৫-৭ লাখের নিচে রিক্সাওয়ালারাও কাবিন দেয়না। তো ধরুন, যেহেতু কাবিন ৫ লাখ। এখন আপনি আপনার বউকে তালাক দিতে চান আর আপনার বউ আপনাকে তালাক দেয়, এই ৫ লাখ কিন্তু ১০০% আপনার বউকে দিতেই হবে মানে দিতেই হবে। দোষ আপনার বউর। পরকীয়া সে করেছে। অশান্তি সে করছে। এখন আপনি তাকে তালাক দিতে চাইলে এই ৫ লাখ কিন্তু মাস্ট আপনার বউকে দিয়ে তারপর তালাক দিতে হবে। আপনি মরে গেলেও এই ৫ লাখ দিতেই হবে। রক্ত বিক্রি করে হলেও। তার উপর আপনি যদি এই ৫ লাখ দিতে না পারেন, আপনাকে জেল খাটতে হবে মাস্ট। নিস্তার নেই। আবার, আপনার বউ চাইলে আপনার নামে মামলা করতেও পারবে যে, কাবিনের টাকা না দিয়েই তার সাথে আপনি শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। সুতরাং, আপনি তাকে ভোগ করেছেন। এটার উপর ভিত্তি করে হলেও আপনাকে জেলে পাঠাতে পারবে খুব ইজিলি।
    ওকে ফাইন, আবার ধরুন আপনি কিছুই করেন নি। জাস্ট কিছুই করেন নি। রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছেন। আপনাকে দেখে কোন মেয়ে যদি ছবি তুলে পুলিশের কাছে গিয়ে বলে এই ছেলে আমায় হ্যারাস করেছে। আপনি ভাই শেষ। বাসা থেকে বিনা নোটিশে তুলে নিয়ে যাবে। হ্যারাস এবং রেইপ ইত্যাদির মামলায়। আপনার কথা কেউ শুনবেনা। ওই মেয়ে জাস্ট বলবে আপনি হ্যারাস করছেন। কোন প্রমাণ লাগবেনা মেয়ের। মুখে বললেই হবে।
    ওকে ফাইন, আপনি কোন মেয়ের সাথে সম্পর্কে আছেন। বাই চান্স ওই মেয়ের হাব ভাব চাল চলন সুবিধার না। আপনি তাকে ছাড়তে চাইছেন। বেশি কিছুনা, সে থানায় গিয়ে মামলা করবে "তার বন্ধুর বাসায় মেয়েকে নিয়ে গিয়ে ছেলে জোরপূর্বক শরীরে হাত দিয়েছে।" ব্যস! আপনি শেষ। এখন পুলিশ তো ধরেই নিবে যে, রিলেশনে ছিলো, তো একসাথে ছিলো, তো ছেলে হয়তো মেয়ের উপর জোর করতে গেছে।" আপনি ডিরেক্ট ধর্ষণের চেষ্টার কেসে ফেসে যাবেন ২ মিনিটেই।
    ওকে ফাইন, আপনি বিয়ে করেছেন। বউ পরকীয়া করছে, আপনি সব জানতে পেরে তাকে চর মারলেন রাগে। শেষ আপনি। এখন বউ সুন্দর করে মামলা করবে, আমার উপর নির্যাতন করে। সুন্দর করে আপনাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। কিসের পরকীয়া, কিসের কী, আপনার অভিযোগের কোন ভেইল ই নেই। তখন আপনি জেল খাটবেন নারী নির্যাতনের। আপনি জেলে, ওদিকে আপনার স্ত্রী ঠিকি পরকীয়া চালাবে। আরও মজার বিষয় এই যে, তাকে তালাক দিতে চাইলেও কাবিন ৫ লাখ যদি ধরে থাকেন সেটা দিয়ে তালাক দিতে হবে অথবা তালাক না দিলেও তার ভরনপোষণ এর জন্য মাসে মাসে টাকা আপনাকেই দিতে হবে। এখন সে পরকীয়া করলেও টাকা তাকে দিতেই হবে মাসে মাসে। আবার, আপনি যদি মাসে মাসে টাকা দিতে না পারেন, অথবা আপনি দিয়ে থাকলেও, তার পরেও আপনার স্ত্রী মামলা করতে পারবে যে, আপনি তার ভরনপোষণ এর দায়িত্ব পালন করছেন না। আপনি তো আর স্ত্রীকে টাকা দিচ্ছেন, সেটার ভিডিও করে, রশিদ করে প্রমাণ রেখে দেন নি। প্রমাণ নেই মানে আপনি ভরনপোষণ এর দায়িত্ব আসলেই পালন করেন নি। এক্ষেত্রে স্ত্রী তালাক ও চাইতে পারবে, বিনিময়ে তালাকের জন্য কাবিনের ওই ৫ লাখ ও দিতে হবে, জেল ও হবে, আবার আপনি তার ভরনপোষণ না করায় সেটার উপর ও জরিমানা, জেল অথবা এক্সট্রা টাকা স্ত্রীকে দিতে হতে পারে।
    আপনি যেদিক থেকেই চিন্তা করুন, আপনার কাছে কিন্তু কোন উপায় নেই। আপনি সারাদিন-রাত বাইরে কষ্ট করবেন। অথচ আপনার স্ত্রী পরকীয়া করছে, এটা দেখে আপনি তাকে একটা চড় মেরে কথা শোনালেও সে মামলা করতে পারবে যে, তাকে আপনি মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করেন। তাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, সে পরকীয়া কেন মরে? সে উত্তর দিবে "আমার স্বামী বাসায় আমায় সময় দেয়না, অভদ্রভাবে কথা বলে, তাই আমি হালকা হতে ওই লোকের সাথে বন্ধুর মতো কথা বলেছি।" শেষ, আপনার বউর কি দোষ? আপনি তো সময় দেন না বউকে। তাই বউ মন হালকা করার জন্য কথাবার্তা বলেছে অন্য একজনের সাথে। এইতো।
    আবার, আপনার স্ত্রী চাইলে খুব সহজে এটাও বলতে পারবে যে, আপনি প্রতি রাতে জোরপূর্বক তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেন। আপনার অনিচ্ছায়। তার মানে আপনার হাজব্যান্ড আপনাকে একপ্রকার ধর্ষণ করছে। এটাতেও হাজব্যান্ড ই অভিযুক্ত হবে। এখন আপনি জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন নাকি দুজনের ইচ্ছেতে, এটা তো আর ক্যামেরায় রেকর্ড করে রাখেন নি যে, আপনার উপর অভিযোগ মিথ্যা। কেউ তো আর প্রাইভেট মোমেন্ট রেকর্ড করে রাখেনা। তাই এখন আপনার স্ত্রী যদি বলে আপনি জোর করে ধর্ষণ করেছেন, তার মানে এটাই সত্যি। আপনি একপ্রকার ধর্ষণ করছেন আপনার স্ত্রীকে। আপনার জেল, জরিমানা সব হবে। একটাও মিস নাই।
    প্রতি বছর প্রায় ৬০-৭০% এর মতো নারী নির্যাতনের মামলা মিথ্যে হয়। প্রায় বেশিরভাগ ই মিথ্যে। আর ৮০%+ পুরুষ বৈবাহিক জীবনে মানসিক চাপে আত্মহত্যা করে।
    এইতো নারীদের কথা। এখন পুরুষদের কুকর্মের কথা আর নাই বলি। ঘরে বউ রেখে বাইরে কচি মেয়ে, নেশা করে বউ পেটানো, এগুলোর কথা আর নাই বলি। তার উপর ধর্ষণ ও তো করেই।
    সমাজে কেউই সু নয়। নারী পুরুষ, সবদিকেই কু রয়েছে। যে যেটা দেখে আর কি। তবে এটা তিতা সত্য যে, পুরুষ এর পক্ষে কোন আঈন নেই। একটাও নেই। যে ঘরের নারী ই পরকীয়ায় লিপ্ত হয়, ওই ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
    সবসময় মনে রাখবেন, আপনার স্ত্রী, আপনার গার্লফ্রেন্ড বা হবু স্ত্রী, তারা কার সাথে চলছে, কাজ করলেও কোথায় কাজ করছে, কেমন মানুষদের সাথে চলছে। সবকিছু খেয়াল রাখাও আপনার দায়িত্ব। কিন্তু, একজন পুরুষ কাজ করবে নাকি বউর পেছনে দৌড়াবে, এটাও প্রশ্ন। আজকাল তো বউদের, গার্লফ্রেন্ডদের ফোন ধরতেও মানা। ফোন ধরে কিছু দেখা মানে ব্যক্তিস্বাধীনতার বাইরে। প্রাইভেসি ভঙ্গ করছেন। আপনি আপনার বউ, গার্লফ্রেন্ড এর ব্যক্তিস্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছেন। এখন আপনার বউকে, গার্লফ্রেন্ডকে ব্যক্তিস্বাধীনতা দিবেন, ওদিকে সে কার সাথে কি কথা বলছে, কি করছে, আপনি জানেন ই না। পরকীয়া করলেও আপনি জানতে পারবেন না। ওইযে, কিছু ঘাটতে গেলেই আপনাকে শুনতে হবে "আমার কি কোন স্পেস নাই, প্রাইভেসি নাই, স্বাধীনতা নাই?"
    যাই হোক, সব "মা জাতি" তো আর এমন না। আর যে নারী এমন, সে "মা জাতি" হবার যোগ্যতাও রাখেনা। সে নারী হতে পারেনা!
    পরকীয়া জিনিসটা পুরুষদের দ্বারা খুব কম হয়। কারণ, পুরুষরা কাজ করেই কূল পায়না। আর আপনি আসেপাশে পুরুষের পরকীয়ার খবর এজন্যই শুনতে পান, কারণ, পুরুষ পরকীয়া করলে স্ত্রী হাউমাউ করে পুরো দুনিয়াকেই জানিয়ে দেয়। এক মহিলা আরেক মহিলাকে বলে। এভাবে পুরো দুনিয়ায় খবর চলে যায়। কিন্তু, স্ত্রী পরকীয়া করলে এটা ওই ঘরের বাইরে কখনো যায়না সহজে। লজ্জার বিষয়! স্ত্রী তো আর বলে বেড়াবেনা সে পরকীয়া করে। আর, স্বামীও তো বাইরে গিয়ে কান্নাকাটি করে কাউকে বলতে যাবেনা যে, স্ত্রী পরকীয়া করে। চেপে যায় পুরুষরা। কারণ, এটা লজ্জার এবং মানুষ শুনলে হাসে যে 'একটা বউ চালাতে পারলোনা, কি করলো জীবনে।'
    ধন্যবাদ ❤️

Comments